৬ নং এর মোটামুটি কথা-
আল্লাহ’র মহান হুকুম ফরজ নামাজ আদায় করার পর দ্বীনের
কিছু কথা বলা এবং শুনা, আল্লাহ্ তা’য়া তৌফিক
দান করছেন সেজন্য দিল থেকে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ্।
আল্লাহ’র নিয়ামত পাইয়া যে শুকরিয়া আদায় করে আল্লাহ্
তার নিয়ামত বাড়াইয়া দেন আর যে না শুকর করে তাকে অনেক পেরেশানিতে রাখেন এবং কঠিন আজাবে
গ্রেফতার করেন।
আপনি যত সম্পদশালি হন আর রাস্তার
ফকির হন,নিজ নিজ অবস্থান থেকে শুকরিয়া
আদায় করলে আল্লাহ্ খুশি হয়ে যান।
হযরত আবু হুরাইরা (রা:) হইতে বর্নিত রসুলুল্লাহ্ (স:) বলেন, আল্লাহ্ তা’য়ালা মানুষের বাহ্যিক সুরত ও সম্পদ দেখেন না বরং মানুষের অন্তর ও আমল দেখেন। আল্লাহর দরবারে কবুলিয়াতির জন্য সিফাত শর্ত। মেহেনত করে যখন আমার মধ্যে সিফাত পয়দা করতে পারবো তখন আল্লাহ্ তা’য়ালার দরবারে আমি কবুল হব। এগুলার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিফাত হলো ঈমান।
1। ঈমান - হচ্ছে হুজুর পাক (স:) এর উপর আস্থা থাকার
দরুন অল্লাহ্ তা’য়ালার পক্ষ থেকে তিনি যে সব খবরা খবর নিয়ে এসেছেন
বিনা দ্বিধায় এক্বিনের সাথে মেনে নেয়া আর ঈমানে বাক্য হচ্ছে লা ইলাহা ইল্লা আল্লাহু
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্।
কালেমার উদ্দেশ্য হলো-
এক্বিনের পরিবর্তনঃ গয়রুল্লাহ্ থেকে হওয়ার
এক্বিন দিল থেকে বের করে আল্লাহ থেকে হওয়ার এক্বিন দিলে পয়দা করা। আমাদের পালনেওয়ালা,খাওয়ানেওয়ালা,রিজীক দেওনেওয়ালা একমাত্র আল্লাহ্। চাকরি-ব্যাবসা
আমাদের খাওয়াইনা, আল্লাহু্ আমাদের খাওয়ান এই এক্বিন দিলে পয়দা
করা।
তরিকার পরিবর্তনঃ কোন তরিকায় শান্তি ও কামিয়াবী নাই একমাত্র হুজুর (সা:) এর তিরিকায় শান্তি
ও কামিয়াবী, এ এক্বিন দিলে পয়দা করতে হবে।
জজ্জবার পরিবর্তনঃ দুনিয়া সুখেরও জায়গা না দুখেরও জায়গা না। আসল সুখ জান্নাতে এবং আসল দুঃখ জাহান্নামে, এই এক্বিন দিলে পয়দা করা।
কালেমার লাভঃ যে ব্যক্তি একিন ও এখলাসের সাথে কালেমা লা-ইলাহা ইল্লা অল্লাহ্ পড়বে তার পিছনের সমস্ত গুণাহ
মাফ হয়ে যাবে।
যে ব্যক্তি মৃত্যুর সময় লা-ইলাহা ইল্লা আল্লাহ্ পড়বে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। ইত্যাদি……..
হাসিলের পদ্ধতিঃ এ কালেমা
হাসিল করতে হলে দাওয়াত দিতে হবে,মশ্ক
করতে হবে এবং দোয়া করতে হবে।
দাওয়াতঃ যেখানে যেখানে গয়রুল্লাহর আলোচনা হয় সেখানে সেখানে অল্লাহ্ তা’য়ালা থেকে হওয়ার দাওয়াত দিতে হবে, সুন্নতের মধ্যে কামীয়াবির দাওয়াত দিতে হবে এবং আখেরাতের জিন্দেগীই যে আসল এর দাওয়াত দিতে হবে।
মশ্কঃ মসজিদ ও ঘরে ঈমানের হালকা বানিয়ে আল্লাহর কুদরতে বড়ত্বের মুজাকারা করতে হবে।
ঈমানের হালকা বানিয়ে আম্বিয়া কেরাম (আঃ) গণ যে আল্লাহ তা’য়ালার উপর ভরসা করেছেন এবং আল্লাহ যে তাহাদের গায়েবী মদদ করেছেন তা মুজাকারা করতে হবে।
সাহাবা (রাঃ) গণ যে আল্লাহ তা’য়ালার উপর এক্বিন করেছেন আর আল্লাহ তাদের কুদরতী ভাবে সাহায্য করেছেন তা ঈমানি হালকায়ে আলোচনা করতে হবে।
কোরআন ও হাদিসের ঈমানের যে আলামতগুলি বর্নিত হয়েছে তা হালকাতে মুজাকারা করতে হবে।
দোয়াঃ আমার ঈমান যাতে কামেল হয় ও সমস্ত উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে কেদেঁ কেদেঁ দোয়া করতে হবে।
2। নামাজঃ নামাজের উদ্দেশ্য হলো-আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালার গায়েবী খাজানা থেকে নেয়ার এক্বিন পয়দা করা। আমলের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ন হলো নামাজ।
লাভঃ যে ব্যাক্তি সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে গুরুত্বের সাথে নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তা’য়ালা তাকে নিজ দায়িত্বে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
নামাজ জান্নাতের চাবি। ইত্যাদি…….
হাসিলের পদ্ধতিঃ এ নামাজ হাসিল করতে হলে মশ্ক করতে হবে এবং দোয়া করতে হবে।
মশ্কঃ ওযু থেকে সালাম ফেরানো পর্যন্ত যতগুলা ফরজ,ওয়াজিব,সুন্নত ও মুস্তাহাব আছে তা আমার নামাজে ফিট করার জন্য মেহনত করতে হবে।
আমি আল্লাহকে দেখছি অথবা আল্লাহ আমাকে দেখছেন এই ধ্যানের সাথে নামাজ পড়তে হবে।
নিজের হাজতকে নামাজের মাধ্যমে পুরা করার বার বার চেষ্টা করতে হবে।
দোয়াঃ আমার ও সমস্ত উম্মতের নামাজ যাতে কামেল হয় এজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।
3। এলেম ও জিকিরঃ এলেম ও জিকিরের উদ্দেশ্য হলো- এলেম ও এলাহীর মধ্যে কামিয়াবী এই এক্বিন দিলে পয়দা করা।
প্রত্যেক সময় এই চিন্তা করা যে, এই মুহুর্তে আমার আল্লাহ আমার কাছে কি চাচ্ছেন।
লাভঃ দ্বীনি এলেম শিক্ষার জন্য যে ব্যক্তি কোন রাস্তা অবলম্বন করবে আল্লাহ তা’য়ালা তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন।
এলেমের সাথে অল্প আমল মুর্খতার সাথে অনেক আমল করার চাইতে উত্তম।
হাসিলের পদ্ধতিঃ দাওয়াত,মশ্ক ও দোয়া করার মাধ্যমে আমরা এলেম হাসিল করব।
দাওয়াতঃ এলেম এলাহীর কামিঃয়াবীর দাওয়াত অন্যকে বেশি বেশি দেওয়া যাতে আমার এক্বিন হয়।
মশ্কঃ ঘরে ও মসজিদে ফাজায়েলে এলেমের তালিমের হালকা কায়েম করে ফাজায়েলে এলেম হাসিল করবো।
মাসায়েলে এলেম ওলামাদের খেদমতে বেশি বেশি গিয়ে জেনে নিব, তরবিয়তের এলেম হায়াতুস সাহাবা এবং সিফতের এলেম মুন্তাখাব হাদিস থেকে হাসিল করবো।
দোয়াঃ আল্লাহ তা’য়ালার কাছে রোজানা দোয়া করব যাতে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ও সমস্ত উম্মতকে উপকারী এলেম দান করেন।
যিকিরের
হলো- সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’য়ালার ধ্যান অন্তরে পয়দা করা যিকির বলে। আর যিকিরে উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য হাসিল করা।
লাভঃ যিকির দ্বারা যে ব্যাক্তি তার জিহ্বাকে তরতাজা রাখবে সে হাসঁতে হাসঁতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
যার দিলে যিকির আছে তার দিল জিন্দা আর যার দিলে যিকির নাই তার দিল মুর্দা।
হাসিলের পদ্ধতিঃ দাওয়াত দিব,মশ্ক করব এবং দোয়া করব।
দাওয়াতঃ আল্লাহ তা’য়ালার তারুফ তাহমিদ,তাজকিয়া উম্মতের মধ্যে চলে ফিরে দাওয়াত দেয়া। অর্থাত্ প্রত্যেক আমল কে ধ্যানের সাথে পুরা করার দাওয়াত দেওয়া।
মশ্কঃ ধ্যানের সাথে সকাল-বিকাল তিন তাসবিহ্ আদায় করা,রোজানা ধ্যানের সাথে কোরআন তেলাওয়াত করা,
মাসনুন দোয়াগুলি শিখে ধ্যানের সাথে জায়গা মত আদায় করা। প্রত্যেক আমল করার সময় এহ্ তেসাবের সাথে করা।
দোয়াঃ আল্লাহ্ তা’য়ালার কাছে দোয়া করতে হবে হাই আল্লাহ্ সবসময় তোমার ধ্যান আমার ও সমস্ত উম্মতকে দান কর।
4। একরামুল মুসলিমীনের উদ্দেশ্য হলো হুজুর (সাঃ) এর হুসনে আখলাক কে আমার জিন্দেগীতে নিয়ে আসা।
লাভঃ কোন মুসলমানের উপকারের জন্য অগ্রসর হলে দশ বছর মসজিদে এতেকাফের সওয়াব পাওয়া যায়।
কোন মুসলমান ভাইয়ের একটি হাজত পুরা করলে আল্লাহ তা’য়ালাতাহার তেয়াত্তরটি হাজত সম্পুর্ন করবেন। অন্যান্য……….
হাসিলের পদ্ধতিঃ এই একরাম আমরা তিন ভাবে হাসিল করবো- দাওয়াত,মশ্ক ও দোয়ার মাধ্যমে।
দাওয়াতঃ অন্যের হক আদায় করার গুরুত্ব নিজের হক ছেড়ে দেওয়ার ফাজায়েল। অন্যের দোষের মধ্যে গুন তালাশ করার বলে উম্মতের মধ্যে দাওয়াত দেওয়া।
মশ্কঃ অন্যের উপর আমার যে হক আছে তা মাফ করে দেয়া এবং নিজে অন্যের হক আদায় করা।
অন্যের দোষ ঢেকে রাখা এবং তার দোষের মধ্যে গুন তালাস করা একরাম।
জালেমকেও মাফ করে দেওয়া। ফেরেস্তাদের হক আদায় করা।
দোয়াঃ আমার এবং সমস্ত উম্মতের আখলাক যাতে সুন্দর হয় এজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
5। এখলাছে নিয়্যত এর উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহ তা’য়ালার হুকুম সমুহকে রাসুল (সাঃ) এর তরিকায় শুধু মাত্র আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য করা।
লাভঃ আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য কেউ যদি সামান্য খেজুর দান করে তো আল্লাহ তা’য়ালা তাকে পাহাড় পরিমান নেকি দান করবেন।
এখলাসের জন্য সামান্য আমল নাজাতের জন্য যতেষ্ট। অন্যান্য………….
হাসিলের পদ্ধতিঃ এখলাস হাসিল করার জন্য দাওয়াত দিব,মশ্ক করব ।
দাওয়াতঃ উম্মতের সাথে চলে ফিরে এখলাসের সাথে দাওয়াত দেওয়া।
মশ্কঃ প্রত্যেক কাজের মধ্যে তিন তিন বার যাচাই করা যে আমি এ কাজ আল্লাহ্ তা’য়ালার জন্য করছি কি না।
প্রতিদিন কিছু কিছু আমল এমন ভাবে করা যাতে আল্লাহ ও ফেরেস্তা ছাড়া কেউ না জানে।
বুজুর্গদের সেবা করা।
নিজের গুনের মধ্যে দোষ তালাশ করা এখলাস।
6। দাওয়াত ও তাবলিগঃ দাওয়াত ও তাবলীগের উদ্দেশ্য হলো- নিজের এক্বিন ও আমল এবং সমস্ত দুনিয়ার এক্বিন ও আমল সহি করার জন্য হুজুর (সাঃ) এর মেহেনতের তরিকাকে জিন্দা করা।
লাভঃ আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল বা এক বিকাল ব্যায় করলে দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম।
আল্লাহর রাস্তায় ধুলা আর জাহান্নামের ধোয়াঁ কখনো একত্রিত হবে না। ইত্যাদি…………
হাসিলের পদ্ধতিঃ দাওয়াত দিব,মশ্ক করবো এবং দোয়া করব।
দাওয়াতঃ উম্মতের জান মাল উম্মতের নিজের না বরং আল্লাহর দেওয়া আমানত এ কথার দাওয়াত দিতে হবে।
মশ্কঃ জীবনের প্রথম সুযোগে চার মাস সময় লাগিয়ে নিজের এক্বিন সংশোধন করা ও জান মালের সঠিক ব্যবহার শেখা।
প্রতি বছর চার মাস সময় আল্লাহ্’র রাস্তায় দেওয়া।
মসজিদওয়ারী পাচঁ কাজ নিজের হিদায়েতের নিয়্যতে মজবুতের সাথে করা।
আমার মসজিদকে আবাদ করার জন্য আড়াই ঘন্টার মেহনতকে দাওয়াত,তালীম ও এস্তেকবালের সুরতে করা।
দোয়াঃ আল্লাহ্ তা’য়ালার কাছে দোয়া করা যাতে এই সিফাতগুলো আমার ও সমস্ত উম্মতের মধ্যে চলে আসে।
----------------------------------------------------------------------
This comment has been removed by the author.
ReplyDelete